North Bengal
Hills
মেঘপিওনের বাড়ি কোথায়? কোথায় আবার? উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে! বিশ্বের যে যে প্রান্তেই ঘুরুন না কেন ভ্রমণার্থীরা, উত্তরবঙ্গের পাহাড় কিন্তু তাঁদের বার বার টানে। কাঞ্চনজঙ্ঘার চিরায়ত আকর্ষণ, পাকদণ্ডীর অমোঘ ইশারা, পাহাড়িয়া গ্রামের হোমস্টের উষ্ণ আতিথ্য— ছুটির মজা যেন বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়। আর শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘাই বা কেন, আকাশছোঁয়া অজস্র শিখররাজি, ঘন পাইনের বন, তার ফাঁক দিয়ে নিজস্ব ছন্দে ছুটে চলা নদী, সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের পাহাড় আমাদের চিরপ্রিয়! বার বার যাওয়া দার্জিলিং-কালিম্পং-কার্সিয়াং-মিরিক ছাড়িয়েও আরও অজস্র বাঁকে লুকিয়ে আছে এখনও অদেখা উত্তরবঙ্গের পাহাড় আর জনপদ। হোটেলের জানলা দিয়ে উঁকি দেয় মেঘের দল, কুয়াশার মায়াজাল ঢেকে দেয় সব কিছু। খানিক দেখা, বেশিটাই অদেখা...তবু পাহাড় আমাদের বুকের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।
Dooars
পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ডুয়ার্সের বিস্তার। ডুয়ার্সের উত্তরে ভুটান, দক্ষিণে বাংলাদেশ। তার পশ্চিমাংশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিস্তা, পূর্ব দিকে বয়েছে তোর্ষা। অসংখ্য নদী ডুয়ার্সের বুক চিরে বয়ে যাচ্ছে। তিস্তা, তোর্ষা ছাড়াও মূর্তি, জলঢাকা, মেচি, লিস, ঘিস, ডায়ানার মতো বহু নদী ডুয়ার্সের ভূমি ছুঁয়ে তাদের সুখ-দুঃখের কাহিনি শোনাতে শোনাতে যায়। জঙ্গলের আস্বাদেই বা ডুয়ার্স কম কিসে? গরুমারা, চাপড়ামারি, লাটাগুড়ি, বান্দাপানি, বক্সা, জয়ন্তীর মতো মনকাড়া জঙ্গলের রূপও তো অশেষ! সেই রূপ ও বন্যপ্রাণকে আরও কাছ থেকে দেখতে চাইলে জঙ্গল সাফারির ব্যবস্থাও রয়েছে। রয়েছে নাগরাকাটা, সিসামারা, কোদালবস্তির মতো প্রকৃত অর্থেই তুলনায় অজানা ডুয়ার্সের নানা গন্তব্য। আমরা বিশ্বাস করি, ডুয়ার্স দেখা না হলে ভ্রমণ মানচিত্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
Tea Gardens
চা বাগান মানেই যেন ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়া। প্রতিটি চা বাগানের নিজস্ব কাহিনি রয়েছে। আছে নিজস্ব রোম্যান্টিকতা। উত্তরবঙ্গ বা উত্তর-পূর্বের চা বাগানগুলি তাদের ঐতিহ্য ও বনেদিয়ানা আজও বহন করে চলেছে। আর কোনও চা বাগানই তার ‘বড়া বাংলো’ বা ম্যানেজারের বাংলো ছাড়া সম্পূর্ণ নয়। এটাই বস্তুত কোনও চা বাগানের সব থেকে বড় বাংলো। এই বাংলোগুলি ছাড়া যেন ‘টি ট্যুরিজম’-এর অস্তিত্বই নেই! উত্তরবঙ্গের পাহাড়েই বলুন বা ডুয়ার্স ও তরাইয়ের গহনে, পাহাড়-জঙ্গল-ঝর্নায় ঘেরা চা বাগানের মনকাড়া সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের বার বার এখানে টেনে আনে। চায়ের ইতিহাস কয়েক শতাব্দীর। এ দেশে তার আগমনের ইতিহাসও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে মোড়া চা বাগানে কয়েকটি দিন কাটানোর অভিজ্ঞতা সঙ্গী হবে সারা জীবনের।